মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে আছে ‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘প্রাগৈতিহাসিক’ ইত্যাদি। নিচে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পত্র দেওয়া হলো।
গল্পটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে পড়ো।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
বানানো গল্প অনেক বলেছি। আজ একটা সত্য ঘটনার গল্প বলি। আপনা থেকে ঠিক জাদুকরি কৌশলে একটা ম্যাজিক ঘটে যাবার মজার গল্প।
ভোরে উঠে বেড়াতে গিয়েছিলাম। যখন বাড়ি ফিরলাম, ছেলেমেয়েদের শোবার ঘর আর রান্নাঘরের মাঝখানের প্যাসেজে বসে সকলে চা জলখাবার খাচ্ছিল।
চুচুর মা বললেন, মেয়ে কী কাজ করেছে জানো? সোনার চুড়িটা ভেঙে দু-টুকরো করেছে।
টুটু প্রতিবাদ জানিয়ে বলল, ইচ্ছা করে ভেঙেছি নাকি? পা পিছলে পড়ে গেলাম তো কী করব? আমার যে বাধা লাগল সেটা বুঝি কিছু নয়।
চুড়ি টুটুর মার, মেয়েকে পরতে দিয়েছিলেন। ঘরে আমি জামা ছাড়ছি, টুটুর মা উঠে এনে খাটের বালিশের তলা থেকে বার করে ভাঙা চুড়িটা দেখালেন। সমান দুটো টুকরো হয়ে গেছে।
আশ্চর্য হয়ে বললাম, দু-টুকরো হলো কী করে?
কে জানে।
টুটুর মা টুকরো দুটো আবার বালিশের তলায় গুঁজে দিলেন।
বললাম, সোনাও বালিশের তলায় থাকবো কাল-পরশু শুনব তো যে হারিয়ে গেছে?
না না। তোমায় যেতে দিয়ে তুলে রাখব।
আমি ঘরের দরজার কাছে বসলাম। টুচুর মা আমায় থেকে দিলেন।
এবং খুব সম্ভব আমার খোঁচা আর নামি জিনিস হারাবার পুরানো অভিজ্ঞতা খেয়াল করে চুড়ির টুকরো দুটো তুলে রাখতে গেলেন।
প্রথমে বালিশের তলাটা হাতড়ালেন। তারপর তাড়াতাড়ি একটা একটা করে দুটো বালিশ তুলে অবাক হয়ে বললেন, ওমা! কী হলো চুড়িটা?
অবাক হবারই কথা। দু’তিন মিনিট আগে চুড়ির টুকরো দুটো বালিশের তলায় গুঁজে দিয়েছেন, এর মধ্যে আপনা থেকে শূন্যে মিলিয়ে গেল। সোনার চুড়ি ভোঙে টুকরো হলে তাদের পাখা গজায় নাকি?
বললাম, কী আর হবে, এখানেই আছে। খুঁজে দেখো।
বিছানার চাদর তুলে ঝেড়ে-বুড়ে টুটুর মা খুঁজলেন। তারপর বিস্ময়ে হতবাক হয়ে আমার মুখের দিকে চেয়ে রইলেন।
তারপর আমিও তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম, মেঝেতে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে ভেবে খাটের তলা থেকে সমস্ত ধর ঝাঁট দেওয়ালাম। কিন্তু কোথায় সোনার টুকরো!
তাজ্জব বানিয়ে দেবার মতোই ব্যাপার। বালিশের তলায় টুকরো দুটো রেখে টুটুর মা রান্নাঘরে গেলেন, আমি এসে বসলাম দরজার কাছে। এর মধ্যে কেউ ঘরেও ঢোকেনি, ঘাটের ধারে-কাছেও যায়নি।
বালিশে চাপা না থাকলেও বরং মনে করা চলত যে এক ফাঁকে জানলা দিয়ে কোনো পাখি ঘরে ঢুকে মুখে করে নিয়ে গেছে, কিম্বা ইঁদুর নিয়ে গেছে।
অদ্ভুত হলেও একটা মানে করা যেত টুকরো দুটোর এভাবে শূন্যে উড়ে যাবার।
টুটুর মা আমায় বললেন, তুমি নিশ্চয় তামাশা করছ। আমি রান্নাঘরে গেছি, সেই ফাঁকে সরিয়ে নিয়েছ।
আমি মাথা নাড়লাম।
সত্যি নাওনি?
না।
কাজ সারা জরুরি ছিল। কাজের ঘরে গিয়ে টেবিলের সামনে চেয়ারে বসলাম কিন্তু কাজ করব কী। কিছুতেই কাজে মন বসে না। এমন একটা রহস্যময় ব্যাপার ঘটে গেল, তার একটা মানে খুঁজে বার করতে না পারলে কি মানুষের স্বস্তি থাকে।
সোনাটুকু হারিয়েছে, হারাক। কিন্তু বালিশের তলা থেকে কী করে হারাল, না জানলে কি চলে?
কাজ বন্ধ করে কলম রেখে চুপচাপ বসে ভাবতে লাগলাম। এলোমেলো চিন্তা দিয়ে এ রহস্য ভেদ করা যাবে না।
কী করে এ রকম ঘটতে পারে একে একে তার সমস্ত সম্ভবপর কথা ভাবতে হবে। আমায় দেখিয়ে টুটুর মা যখন ঢুকরো দুটো আবার বালিশের তলায় রাখতে গেলেন তখন কোনো গোলমাল হয়নি তো?
ভাবতে গিয়েই আমার এমন হাসি পেল। খাটের উপর বিছানা, বিছানার এক মাথায় পাশাপাশি দুটো করে
বালিশ ওয়াড় দেওয়া বালিশ। বালিশ দুটির তলে টুটুর মার চুড়ির টুকরো দুটি গুঁজে দেওয়ার দৃশ্যটা কল্পনা করতে গিয়েই রহস্য ভেদ হয়ে
টুটুর মাকে ডেকে বললাম, তোমরা এত খুঁজে পেলে না, আমি এই ঘরে বসে চুড়ি খুঁজে দিচ্ছি।
কোথায় আছে?
বালিশের ওয়াড়ের ভেতর খোঁজোগে যাও, পেয়ে যাবে!
সোজা ব্যাপার। তলার বালিশের ওয়াডের খোলা মুখের দিকটা ছিল ধারের দিকে। বালিশের তলা মনে করে টুটুর মা টুকরো দু’টো রাখতে ওয়াড়ের মধ্যে হাত চালান করে দিয়েছিলেন।।
খোঁজা হয়েছিল তন্ত্র তন্ত্র করে, শুধু বালিশের ওয়াড় বোঁজার কথা খেয়াল হয়নি। মানুষের সব দিক খুব সোজা দিক পর্যন্ত খেয়াল হয় না বলেই ম্যাজিক সম্ভব হয়েছে।
শব্দের অর্থ
ওয়াড়= বালিশের ঢাকনা।
তন্ন তন্ন করে খোঁজা = খুব ভালো করে খোঁজা।
তাজ্জব বানিয়ে দেওয়া = অবাক করে দেওয়া।
পাখা গজানো = উড়ে যাওয়া।
প্যাসেজ= ফাঁকা যায়গা
হাত চালান করা= হাত ঢুকিয়ে দেওয়া।
রহস্য ভেদ করা= অজানা বিষয় জানতে পারা।
শূন্যে মিলিয়ে যাওয়া অদৃশ্য হয়ে যাওয়া।
তামাশা = মজা
গল্প বুঝি
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হত। উপরের গল্পে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে রাখো।
বলি ও লিখি
‘ম্যাজিক’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘ম্যাজিক’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় লেখক। তিনি ছোটো ছোটো বাক্যে সহজ-সরল শব্দে প্রচুর গল্প-উপন্যাস লিখেছেন। ‘তোমাদের জন্য রূপকথা’, ‘নীল হাতি’, ‘বোতল ভূত’, ‘কানী ডাইনী’ ইত্যাদি তাঁর ছোটোদের জন্য লেখা বই। নিচের গরটি হুমায়ূন আহমেদের ‘পুতুল’ নামের বই থেকে নেওয়া।
গল্পটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে পড়ো।
হুমায়ুন আহমেদ
পুতুলের ঘর থেকে তাদের বাগানটা দেখা যায়। এত সুন্দর লাগে তার। শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। তাদের বাগান অন্যদের বাগানের মতো নয়। তিনটা বিশাল বড়ো বড়ো গাছ, একটা রেনটি গাছা এত বড়ো যে মনে হয় এই গাছের পাতাগুলো আকাশে লেগে গেছে। আর দুটো হচ্ছে কদম ফুলের গাছ। কদম ফুলের গাছ দুটি পাশাপাশি যেন দুই জমজ বোন, একজন অন্যজনের গায়ে হেলান দিয়ে আছে। বর্ষাকালে গাছ দুটিতে কী অদ্ভুত ফুল ফোটে। সোনার বলের মতো ফুল।
পুতুলের মা জেসমিন কদম ফুলের গাছ দুটি একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। কারণ হচ্ছে পুঁয়োপোকা। কদম গাছে খুব পুঁয়োপোকা হয়। আর শুয়োপোকা দেখলেই জেসমিনের বমি পেয়ে যায়। তিনি প্রতি শীতকালে একবার করে বলেন— গাছগুলো কাটিয়ে ফেলা দরকার। শেষ পর্যন্ত কেন যেন কাটা হয় না। দেখতে দেখতে বর্ষা এসে যায়। অদ্ভুত কদম ফুলগুলো কোটে। কী যে ভালো লাগে পুতুলের
এখন শীতকাল। কদিন আগে ঠিক করা হয়েছে বড়ো বড়ো গাছগুলো সব কেটে ফেলা হবে। জেসমিন বজলু মিয়া বলে একটি লোককে ঠিক করেছেন। লোকটির মুখে বসন্তের দাগ। বজলু মিয়া গতকাল এসে বড়ো বড়ো গাছগুলো সব দেখে গেছে। দড়ি দিয়ে কী সব মাপ-চাপও নিয়েছে। বলে গেছে সোমবারে লোকজন নিয়ে আসৰে।
পুতুলের এই জন্যেই খুব মন খারাপ। গাছগুলোর দিকে তাকালেই তার কান্না পেয়ে যায়। বাগানে এলেই সে এখন গাছগুলোর গায়ে হাত বুলিয়ে ফিসফিস করে কী সব কথা বলে। হয়তো-বা সান্ত্বনার কোনো কথা। আজও তাই করছিল। গাছের গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে সে লক্ষ করল, তার বাবা বাগানে হাঁটছেন। তাঁর হাতে একটি ভাঁজ-করা খবরের কাগজ। তিনি অন্যমনস্ক ভলিতে হাঁটছেন। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছে খুব রেগে আছেন। খুব রেগে গেলে তিনি এ রকম গভীর হয়ে যান। বাগানে কিংবা ছাদে মাথা নিচু করে হাঁটেন। পুতুলের মনে হলো আজ বোধহয় বাবা-মার মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। এই একটা খারাপ ব্যাপার। দুদিন পরপর তাঁরা ঝগড়া করেন। ঝগড়া করবে ছোটোরা। আড়ি দেবে ভাব নেবে। বড়োরা এ রকম করবে কেন?
পুতুল ছোটো ছোটো পা ফেলে রেনট্রি গাছটার দিকে যাচ্ছে। তার চোখ বাবার দিকে। বাবা কতটা রেগে আছেন সে বুঝতে চেষ্টা করছে। পুতুলের বয়স এগারো। এই বয়সের ছেলেরা চারদিকে কী হচ্ছে না হচ্ছে খুব বুঝতে চেষ্টা করে।
রহমান সাহেব পুতুলকে রেনট্রি গাছটার দিকে যেতে দেখলেন। কিছু বললেন না। তিনি জানেন, এই গাছের নিচে পুতুল প্রায়ই এসে বসে। এটা সম্ভবত পুতুলের কোনো গোপন জায়গা। সব শিশুদের কিছু গোপন জায়গা থাকে। তাঁর নিজেরও ছিল। পুতুলকে দেখে মাঝে মাঝে তাঁর নিজের শৈশবের কথা মনে হয়। তবে তিনি পুতুলের মতো নিঃসঙ্গ ছিলেন না। অনেক ভাইবোনের মধ্যে বড়ো হয়েছেন। তাঁদের বাড়িটা ছিল হৈ চৈ হুল্লোড়ের বাড়ি। নিজের ভাইবোন ছাড়াও চাচাতো ভাইবোন, ফুপাতো ভাইবোন, পাড়ার ছেলেপেলে। সারাদিন চিৎকার চেঁচামেচি হৈ চৈ।
রহমান সাহেব রোদে পিঠ দিয়ে বললেন। বসতে হলো ঘাসে। এমনভাবে বলেছেন যেন পুতুল কী করছে দেখা যায়। তিনি সারাদিন ব্যস্ত থাকেন, পুতুল কী করে না-করে খবর রাখতে পারেন না। ছেলেটা খুবই একা। তাকে আরো কিছু সময় দেওয়া দরকার তা তিনি দিতে পারছেন না। তিনি শুধু গলায় ডাকলেন-পুতুল।
“জি বাবা।‘
‘কী করছ তুমি?’
“কিছু করছি না।“
কাছে এসো।‘
পুতুল ভয়ে ভয়ে এগিয়ে আসছে। তিনি লক্ষ করলেন, পুতুলের খালি পা। অথচ তাকে অনেকবার বলা হয়েছে খালি পায়ে বাগানে না আসতে। গায়েও পাতলা একটা শার্ট ছাড়া কিছু নেই। শীতের সকাল বেলা পাতলা একটা জামা পরে কেউ থাকে? রহমান সাহেব খুব বিরক্ত হলেন। বিরক্তি প্রকাশ করলেন না। ছেলেটা হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। এ রকম হাসিমুখের একটি ছেলেকে ধমক দিতে মায়া লাগে।
“তুমি প্রায়ই এই রেনটি গাছটার নিচে বসে কী করো ওখানে?”
“কিছু করি না। বসে থাকি।‘
“কিছু নিশ্চয়ই করো। শুধু শুধু কি কেউ বসে থাকে?”
পুতুল লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। তার হাসি বলে দিচ্ছে সে শুধু শুধু বসে থাকে না। রহমান সাহেব বললেন, “বসে বসে ভাবো তাই ন
‘হ্যাঁ ভাবি।‘
‘কী নিয়ে ভাবো?’
পুতুল উত্তর না দিয়ে আবার লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। রহমান সাহেবের ইচ্ছে করল ছেলেটাকে পাশে বসিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। মাথা ভরতি রেশমের মতো চুল। দেখলেই হাত বোলাতে ইচ্ছে করে।
আজ তোমার শরীর কেমন?”
‘ভালো।‘
কি রকম ভালো সেটা বলো — খুব ভালো, না অল্প ভালো নাকি মন্দের ভালো।‘
‘খুব ভালো!’
“আচ্ছা ঠিক আছে। যাও যা করছিলে করো।
পুতুল গেল না। দাঁড়িয়ে রইল। মনে হচ্ছে তার কিছু বলার আছে। কিছু বলতে চাচ্ছে অথচ বলতে পারছে না। রহমান সাহেবের খানিকটা মন খারাপ হলো। এ তো বাচ্চা একটা ছেলে, সে কেন মনের কথাগুলো সহজভাবে বাবা-মাকে বলতে পারবে না। তিনি নরম গলায় বললেন, ‘পুতুল তুমি কি কিছু বলতে চাও?”
পুতুল মাথা নাড়ল। সে বলতে চায়। রহমান সাহেব বললেন— ‘কী বলতে চাও বাবা?”
গাছগুলো কেন কাটবে?
গাছ কাটা তোমার পছন্দ নয়?
না।
ছোটোৱা অনেক কাজ করে যেগুলো বড়োরা পছন্দ করে না। আবার ঠিক তেমনি বড়োরা অনেক কাজ করে। যা ছোটোৱা পছন্দ করে যা গাছগুলোতে শুঁয়োপোকা হয়, তোমার মা এই পোকাটা সহ্য করতে পারেন না।
পুতুল চুপ করে রইল। রহমান সাহেব বললেন—তাছাড়া আরেকটা কারণও আছে। গাছগুলোর জন্য ঘরে আলো-হাওয়া তেমন ঢুকতে পারে না। এখন দেখবে প্রচুর রোদ আসবে।
(সংক্ষেপিত)
শব্দের অর্থ
রেনট্রি= শিরীষ গাছ।
শুঁয়োপোকা = সারা গায়ে লোমযুক্ত এক ধরনের পোকা।
আড়ি দেওয়া = অভিমান করা।
গম্ভীর= চুপচাপ।
শৈশব= অদৃশ্য হয়ে যাওয়া।
বসন্ত= রোগের নাম।
হুল্লোড়= হুড়াহুড়ি
গল্প বুঝি
শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী তোমরা দলে ভাগ হও। উপরের গল্পে কী বলা হয়েছে, তা দলে আলোচনা করে। বোঝার চেষ্টা করো। কোন দল কেমন বুঝতে পেরেছে, তা যাচাই করার জন্য এক দল অপর দলকে প্রশ্ন করবে। এজন্য আগেই দলে আলোচনা করে কাগজে কয়েকটি প্রশ্ন লিখে রাখো।
বলি ও লিখি
‘পুতুল’ গল্পটি নিজের ভাষায় বলো এবং নিজের ভাষায় লেখো।
জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক খুঁজি
‘পুতুল’ গল্পের সাথে তোমার জীবনের বা চারপাশের কোনো মিল খুঁজে পাও কি না, কিংবা কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাও কি না, তা নিচে লেখো।
গল্পের বৈশিষ্ট্য খুঁজি
গল্পের সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার মাধ্যমে বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝার চেষ্টা করো।
ক্রম | প্রশ্ন | হ্যাঁ | না |
---|---|---|---|
১ | পরপর দুই লাইনের শেষে কি মিল-শব্দ আছে? | ||
২ | হাতে তালি দিয়ে দিয়ে কি পড়া যায়? | ||
৩ | লাইনগুলো কি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের? | ||
৪ | লাইনগুলো কি সুর করে পড়া যায়? | ||
৫ | এটি কি পদ্য-ভাষায় লেখা? | ||
৬ | এটি কি গদ্য ভাষায় লেখা? | ||
৭ | এর মধ্যে কি কোনো কাহিনি আছে? | ||
৮ | এর মধ্যে কি কোনো চরিত্র আছে? | ||
৯ | এখানে কি কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে? | ||
১০ | এটি কি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করা? | ||
১১ | এর মধ্যে কি কোনো সংলাপ আছে? | ||
১২ | এটি কি অভিনয় করা যায়? |
গল্প কী
গল্প এক ধরনের গদ্য রচনা, যেখানে কাহিনি ও চরিত্র থাকে। গল্পের কাহিনি সাধারণ ঘটনার চেয়ে একটু ভিন্ন হয়। এই কাহিনি বাস্তব জীবনে ঘটে এমন হতে পারে, আবার কল্পিতও হতে পারে। এদিক দিয়ে গল্প দুই ধরনের: বাস্তবের সাথে মিল আছে এমন গল্প এবং কাল্পনিক বিষয় নিয়ে রচিত গল্প। গল্প বইয়ের মতো বড়ো হয় না; অনেকগুলো গল্প নিয়ে একটা বই হতে পারে। যাঁরা গল্প লেখেন, তাঁদের গল্পকার বলে।
গল্প লিখি
নিচের ফাঁকা জায়গায় বানিয়ে বানিয়ে তুমি একটি গল্প লেখো। লেখার সময়ে গল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো খেয়াল রেখো। প্রটির একটি নাম দাও।
যাচাই করি
তোমার লেখা গল্পে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কি না, যাচাই করে দেখো।
১. কাহিনি আছে কি না।
২. চরিত্র আছে কি না।
৩. সংলাপ আছে কি না।
৪. গদ্যভাষায় লেখা কি না।
৫. এর কাহিনি সাধারণ ঘটনার চেয়ে ভিন্ন কি না।
Read more